পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৭

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুর্জয় ট্যাঙ্ককে কতটা আধুনিক করেছে বাংলাদেশ



বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রায় ২ শতাধিক চাইনিজ টাইপ ৫৯ ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে। ট্যাংকটিকে আসলে সেকালে রূপের ট্যাঙ্ক বলা চলে শুধু বাংলাদেশ নয় ইরান, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া সহ পৃথিবীর ১৮ টি দেশ এই ট্যাংকটি এখনো ব্যবহার করে আসছে। এর মধ্যে ইরান, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ নিজেদের প্রচেষ্টায় এই ট্যাংকে আধুনিক করে তুলেছে। আর এই দেশগুলোর মধ্যে সবচে বেশি এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ইন্সটল করেছে বাংলাদেশ।এখন পর্যন্ত ১৭৪ টি ট্যাঙ্কের পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। বলতে গেলে টাইপ ৫৯ এর কিছুই রাখেনি বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়াররা। সেকেলে রূপের এই ট্যাংকে এতটাই পরিবর্তন করা হয়েছে যে এর নতুন নাম হয়েছে দুর্জয় মেইন ব্যাটেল ট্যাঙ্ক।
চলুন এবার দেখি কি কি পরিবর্তন আনা হয়েছে আমাদের দুর্জয় ট্যাংকে।
১. ১০০ মিলিমিটার মেইন গান কে ফেলে দিয়ে এতে লাগলো হয়েছে ১২৫ মিলিমিটার গান যাতে করে এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২. টাইপ ৫৪ মেশিনগানটির পরিবর্তে Type-85 12.7×108 এম এম মেশিন গান যুক্ত করা হয়েছে । ৩০০০ রাউন্ড গুলির এই মেশিনগান শত্রুর এটাক হেলিকপ্টার এবং কম উচ্চতায় উড়ে যাওয়া বিমান বা সামনে আসা শত্রু যুদ্ধযানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া শত্রু সেনাদের বিরুদ্ধে ফায়ার সাপোর্ট দিতে রয়েছে ৭.৬২ মিলিমিটার মেশিনগান।
এই ট্যাংকে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে ৮১ এমএম স্মোক গ্রেনেড।
এই অস্ত্র ছড়াও এই ট্যাংক থেকে ব্যারেল লন্সড এটিজিএম বা এন্টি ট্যাংক মিসাইল ছোড়ার প্রযুক্তি যোগ করা হয়েছে।
৩. এই ট্যাংকের গায়ে বিভিন্ন ধরণের বর্ম লাগানো হয়েছে যা ট্যাংকটিকে আরও শক্ত পোক্ত এবং শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষায় শক্তিশালী করে তুলেছে। এর মধ্যে রয়েছে ই আর এ এবং মডুলার কম্পোজিট আর্মার যে দুটি প্রযুক্তি শত্রুর বিভিন্ন আক্রমণ সহ্য করতে সক্ষম। এছাড়া এর পিছনের দিকে যুক্ত করা হয়েছে বিশেষ ধরণের খাঁচা যা একে শত্রুর আরপিজির আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা প্রদান করেছে। এই ধরণের বর্মের কোনোটাই ছিল না এই ট্যাংকে। বাংলাদেশ এগুলো নতুন করে যুক্ত করেছে।
৪. এছাড়া এতে আরো যোগ করা হয়েছে নিউক্লিয়ার বায়োলজিক্যাল এন্ড কেমিক্যাল প্রটেকশন ব্যবস্থা এবং ফায়ার সুপারেশন ব্যবস্থা। যা শত্রুর মারাত্মক রাসায়নিক আক্রমণ থেকে ট্যাংক ক্রুদের রক্ষা করবে।
৫. আগের ৫২০ হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিনের পরিবর্তে লাগানো হয়েছে ৭২০ হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিন যা এর শক্তিকে পূর্বের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি করেছে।
৬. এগুলো ছাড়াও এতে যুক্ত করা হয়েছে লেজার ওয়ার্নিং রিসিভার, লেজার ডিজিগনেটোর, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, কম্ব্যাট ডাটা লিংক, থার্মাল ইমেজ প্রযুক্তি যা একে রাতের অন্ধকারে দেখার ক্ষমতা প্রদান করেছে।
 এগুলো ছাড়াও যোগ করা হয়েছে ভিএলসি ৩০০০ রেডিও কন্ট্রোল সিস্টেম সহ বিভিন্ন প্রযুক্তি।
এক কথায় পুরোনো ট্যাঙ্কের বডির উপর বিভিন্ন বর্ম এবং ভেতরে সব আধুনিক নতুন নতুন যন্ত্রপাতি এবং অস্ত্র। যেটাকে আর সেকেলে বা পুরোনো ট্যাঙ্ক কোনো ভাবেই বলা সম্ভব না। আর এই বিশাল পরিবর্তনের ফলে এই টাইপ ৫৯ জাতির মধ্যে দুর্জয় হলো সবচে আধুনিক ট্যাংক। আর আমাদের ভবিষ্যৎ দেশীয় ট্যাঙ্কের স্বপ্ন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks For Your Comment!!!